বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) অমর একুশের দিনে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। ১৯৫২ সনে এই দিনে বাংলাদেশের তরুণেরা ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এগিয়ে গিয়েছিল। তাঁদের সেই সংগ্রাম ও আত্মদানের ধারাবাহিকতাতেই ১৯৭১ সনে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
দুঃখজনক যে, স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলাভাষার যে মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তা সেভাবে হয় নি। বাংলাভিত্তিক একমুখী শিক্ষাব্যবস্থার বদলে দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থার আবির্ভাব ঘটেছে; এবং দেশের এলিট শ্রেণী তাদের সন্তানদের ইংরাজি ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার দিকেই ধাবিত করেছে। বিশ্বায়নের এই যুগে ইংরাজির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু সেটা বাংলা এবং ইংরাজির ভারসাম্যপূর্ণ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমেও অর্জন করা সম্ভব; এবং ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের জন্য সে ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল। শিক্ষাক্ষেত্রে এবং অর্থনীতি এবং সমাজ জীবনের অন্যান্য বহু ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার বিদ্যমান অধস্থন ভূমিকা একুশের চেতনার সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। এই মৌল অসংগতি বজায় রেখে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন বহুলাংশে আনুষ্ঠানিকতা। জার্মানী ও জাপানের মতো বহু দেশ নিজ ভাষার প্রাধাণ্য বজায় রেখেই বিশ্বায়নে সাফল্য অর্জন করেছে। একুশে ফেব্রুয়ারির এই দিনে বেন স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা ভাষার মর্যাদা বিষয়ে উপর্যুক্ত মৌল অসংগতি দূর করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। নিজ ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা নিজ দেশের পরিবেশ রক্ষার সংগ্রামকেও জোরদার করবে।
শহীদ স্মৃতি অমর হোক!