বেন প্রথম থেকেই রুপ্পুর প্রকল্প সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করে আসছিল। বাংলাদেশের মতো ঘন-বসতিপূর্ণ দেশের কেন্দ্রস্থলে আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন উপযোগী কীনা, তা একটি প্রশ্নের বিষয়। দ্বিতীয়ত, জার্মানী ও জাপানের মতো প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ও সামাজিক শৃংখলাসম্পন্ন দেশ যখন আণবিক বিদ্যুৎ থেকে সরে আসছে, তখন বাংলাদেশের পক্ষে আণবিক বিদ্যুতের দিকে অগ্রসর হওয়া সমীচীন কীনা সে প্রশ্ন অনেকেই তুলেছেন।
রুপ্পুর প্রকল্পের ব্যয় সংক্রান্ত সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান এই প্রকল্প সম্পর্কে সংশয় ঘনীভূত করেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। যেভাবে এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় হু-হু করে বাড়ছে, তাতে অচীরেই এর পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেলেও বিস্ময়ের হবে না। ফলে রুপ্পুর একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুতকেন্দ্র হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর জগদ্দল পাথরের মতো একটি শ্বেতহস্তীতে পরিণত হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত করার লক্ষ্য থেকে বর্তমান সরকার অনেক ক্ষেত্রেই ব্যয়ের যৌক্তিকতার প্রতি অমনোযোগী হচ্ছেন বলে প্রতীয়মান হয়। রুপ্পুর প্রকল্প এই প্রবণতারই সবচেয়ে দৃশ্যমান উদাহরণ হিসেবে অনেকের নিকট পরিগণিত হচ্ছে।
রুপ্পুর প্রকল্প এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সুতরাং এই প্রকল্প নিয়ে এখনও দ্বিতীয় চিন্তার সুযোগ রয়েছে। সরকারের উচিত হবে সৎ, নিরপেক্ষ এবং মর্যাদাসম্পন্ন কোন অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রুপ্পুর প্রকল্পের লাভ-ক্ষতির পুনর্নিরীক্ষণ করা, এবং তার পরই কেবল এই প্রকল্প সুম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। বেন মনে করে যে ২০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে অন্যান্য কম ঝুঁকিসম্পন্ন এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
রুপ্পুর প্রকল্প বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে অধ্যাপক মঈনুল ইসলামের প্রবন্ধের জন্য দেখুন।