আগামী ৩০শে নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জলবায়ু সংক্রান্ত সম্মেলন (কপ-২১) শুরু হতে চলেছে। ডিসেম্বর ১১ তারিখ পর্যন্ত তা চলবে। এই সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নতুন একটি চুক্তি সম্পাদনের আশা করা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি সহনীয় সীমায় রাখার সুযোগ দিনদিনই ফুরিয়ে যাচ্ছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে প্যারিস সম্মেলনের বিশেষ গুরুত্ব।
বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, গত বছরের মতো এবছরও বাংলাদেশের সরকারী প্রতিনিধিদলে দেশের পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। ২০১৪ সনে গঠিত সরকারের নতুন পরিবেশ মন্ত্রীর এ ধরণের পদক্ষেপে দেশের পরিবেশবাদী মহল রুষ্ট এবং উদ্বিগ্ন।
দীর্ঘমেয়াদী বিচারে জলবায়ু পরিবর্তনই সবচেয়ে বেশী জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এরূপ একটি বিষয়ে সরকারের কর্তব্য গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং সেই ঐক্যবদ্ধ শক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক অংগণে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা এবং সেই অবস্থানের পক্ষে সংগ্রাম করা। পরিবেশবাদীদের সরকারী প্রতিনিধিদলের বাইরে রেখে দেয়া উপর্যুক্ত কর্তব্যের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।
দীর্ঘকাল ধরে জলবায়ু ইস্যু নিয়ে কাজ করার ফলে বাংলাদেশের পরিবেশবাদী মহলে বেশ পারদর্শীতা ও সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে। পক্ষান্তরে সরকারী আমলাতন্ত্রের মধ্যে অনেকক্ষেত্রে এরূপ পারদর্শীতা ও সক্ষমতার অভাব রয়েছে। ফলে পরিবেশবাদীদের প্রতিনিধিদের সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল বেশী শক্তিশালী হতে পারতো। কেন বর্তমান পরিবেশমন্ত্রী এ বিষয়টি বুঝতে পারছেন না, তা বোধগম্য নয়। বেন আশা করে যে, বিষয়টির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষিত হবে, এবং তিনি এ বিষয়ে উদ্যোগী হবেন। প্রধানমন্ত্রীর নিজেরও জলবায়ু সম্মেলনে যোগদানের কথা। কাজেই একটি শক্তিশালী, প্রতিনিধিত্বসম্পন্ন সরকারী দল নিশ্চয় তাঁর কাম্য হওয়ার কথা।
বেন আশা করে যে, আগামী জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং তার জন্য পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের যোগ্য নেতাদের সমন্বয়ে একটি উপযোগী প্রতিনিধিদল গঠন করবে।