%PDF-1.7 1 0 obj << /Type /Catalog /Outlines 2 0 R /Pages 3 0 R >> endobj 2 0 obj << /Type /Outlines /Count 0 >> endobj 3 0 obj << /Type /Pages /Kids [6 0 R 17 0 R 19 0 R ] /Count 3 /Resources << /ProcSet 4 0 R /Font << /F1 8 0 R /F2 9 0 R /F3 10 0 R /F4 11 0 R >> /XObject << /I1 12 0 R >> /ExtGState << /GS1 13 0 R /GS2 14 0 R /GS3 15 0 R /GS4 16 0 R >> >> /MediaBox [0.000 0.000 595.280 841.890] >> endobj 4 0 obj [/PDF /Text /ImageC ] endobj 5 0 obj << /Producer (dompdf 1.0.2 + CPDF) /CreationDate (D:20251217211703+00'00') /ModDate (D:20251217211703+00'00') >> endobj 6 0 obj << /Type /Page /MediaBox [0.000 0.000 595.280 841.890] /Parent 3 0 R /Contents 7 0 R >> endobj 7 0 obj << /Filter /FlateDecode /Length 1180 >> stream xXr6}Wc3c'=VԎ&yH&-'YH\v)3@س88\rv\.AwVK&g8Qf̢䢿z,2SRtV5[?7_6-Ʉ72 .@#PNm/ d?H/1p%v[/R8! DŽhdRfES*vf[/n||7^9ǜ2i-ЭfRY!vi28zԒR0>u4 eh]q& :HهtR܊#:9k qSkg#–Dufv̯ajDۈ8͆5m0ʆR6 ;^i?|xb[i#*qЂW _Zf<:,~ \(5M:TߺG,cʿizܪ@^QD(9U!y03@JUV ;+!'> endobj 9 0 obj << /Type /Font /Subtype /Type1 /Name /F2 /BaseFont /Times-Bold /Encoding /WinAnsiEncoding >> endobj 10 0 obj << /Type /Font /Subtype /Type1 /Name /F3 /BaseFont /Helvetica /Encoding /WinAnsiEncoding >> endobj 11 0 obj << /Type /Font /Subtype /Type1 /Name /F4 /BaseFont /Helvetica-Bold /Encoding /WinAnsiEncoding >> endobj 12 0 obj << /Type /XObject /Subtype /Image /Width 200 /Height 200 /ColorSpace /DeviceRGB /Filter /DCTDecode /BitsPerComponent 8 /Length 11857>> stream JFIFC     C   "  tKEc-gWOGݵnu;s]gIKٿ9s nV׊#XJ6ާMm=q64E"twnǪ"q*"B7Ky6Uj|mUjsX|8zo%Ʀw Qj=>yAJ՞Mekjc6^xxxt/G67%F0Y צں+n~?1L tq kE^l8 M>rlF;vhZLvZѽOd/2C ;gƘ&wC mls`0''ԛ!nԧ8kR1kNH{vGBÅ ã{"=]-s[e/H'{?i؂# `D՟|Z,U{]8OՒ7R,x) 8Qp$I^PTS >zQn3!Wz.2{T| ^Kik1` xp<2X&x`+b!05 #%3$24601!"B3ZƐYXW֞kgK253 Av:1~Q8**~88xMIZM2A"蠬LΥNn&9Lk]?|IflEF3$BO!{l^n<* Y^@r+PKKO̝ 3(f,|Fd Gڌ$Xz$KobԲwT;VMl ;T5%.!iq:G< T J-qxjVNOR~2'V-#=;I79R;s19|p9'qNiNbq5V;>L}-yq_଀d'{Nmp$~,'DnEa!viAF TӧB4tyJAgJ?f#UuC>-መ~QD+5`6~ 7Fs7< ßbCY1v" DP&':~_:[K jF6vC {>s7O1̾^f܈{l7)9BH%NL4+$mZ[1l ua/ Ye[bg/=JHV u0[᮷.JCQf' ٍ O2A MseA?އڔ֕+rn L4!_xrR~IC; }Xg6uy8 @D]&h=uԽUƛ)[9gj79塿^Fi/!){.XkmqYV1/ͷQpph9[J%jgmFaJ0',TDowC G^Ue0k&r.*Ú`sB@;4i1:^qymnqX,k aR&حZٰlr<]y  .ĤٍL(jI%9e@Պ\9†f~14dklI ®#(̡2\ [@~UkVy dܞҠA,I*>⶜W}-fz=&K2WH8}d>Gև6Rʦz\s@NUpH"RZnS(d$Y{7gq< KMSZR5J1Döã ϖ|9壓_ GDz~1lknc4eF +HUڸ*YA8ŧ@\-g6K7:y!`@ =͵㑄_^"K@j^guQu_&.ȹRXLS,]VN?yͦAfӈ˯"G5Ib| QȟU3_/CGFdI:'|"ՙN%/4&%!u׌纎 ԰JA{)H9:[bgcZYEʍK:̶}f*e*>IZոkZLN:qTv֤GmiiufKD4 ͤUpp7Z ݰ^8&B υd,%Mw,! 0123Aq"Q$a?6Яv9kۘB,FO!Q" r|E2r:_e>Y^|ȁ D~=m:2Ԭ̹n\1eq9m|v| :;~:mXa*}>;TvIZiaG:!"1AQq #2Bar3C0Rbs$S4c?3_WV=ԉ)"~w XhMq%>\ #^)0%)9-Hz298=on[Jtway4 p;/ G yJUr +.~4Q9->j҃HȠqZ6*VX]i֤`ں*Oox<8Tq٦+}6)9ϙRM/;%]Tqe.T'Gʃ)=~XF?~ ۟{59tuSC1!BwGfDQ]r1&ݼI$xFxdO|{"q?z0Z W%թIV\undFr_Ndi5]Nm^G}LЩ\XKƝwEcğ=Oۭ$ik! 1ƹaXK,0zxPݨQqHY8@~53ZpΣ|rM=3Ѽ":=2H5j?C_ظ6GlQHVMCMqMŏ-._m.o* "wD#k;%~`R@k ڮR܃RHG_OwFp~~~GtH pA+BKE .<%iNx{2 +vlein&RAkn  &ҡ} uTۧB43rvH{c~VTZ $n+yR5JqV#ңOblۯ,p4xդVrNiIK< IZX*[1sI3Aѩ,8 ?8[I:y,YzWqn4)?):~6uцݴT/j3H1BֆRԒJ72"i=clTW>2j ~59$e[ыOuSn/r٠;dP"!LzfG5IytC"kdzP[X5rO=Ǚҽ\ei}Qx)Qx]}effF8=;7:L7S%O3z԰`x|Ё҃O̓xVIշ񒴯|rf%Dq(*2 x|D_派c>MDO/[ Y9wrOȾBҷWO֕weMFD)n :Zx-/UCohmK&\H!I#t5zvYv$sR} r9Xԑʡ'_"miuxԟmm.75)_Vk|vbllQo| !6l]Zk-;ձƮf2<YIߏYXD.-e׍\*h4hu_U wy%e8jfK.)кXB~(7U- i0*Vp4ofwngD#4V|SXH=+b>s7A:\{X_OƯZHqM'4!A un_ClN2U]?Ҷq\L$n֭3ʸҹM"O)WOc[r1>ڗ =ki$HN4S޶唷Rol[aԏl6r(<W]B.Mp-$x<@5v'VB/\7(ӏ,VȀIyҶkf1kJiwmkg 1@*y9F7w^h..!e խ̯ea[&%k2s5m9XW t~*.G[K L"} jLo[WE Ghd'@PhGA u&,ɜZ#ԤȦV5j?[NLIJP) []ǎۘ_?0HS܍45R},/|S1 qқ VZ26Zdj<s7A|3]N73/ F4vK ;5"vLA&p-OvwJYgI120]X,)%n'c{{3~ ļ"\MMV}d0駒F)JDVR ZmrCJTo i#" $,&jOc3 OZ֭PTR)Uh6"2Yt\]ү-%GY`Ej?AoKQPi:Bɋ{0F+|¥r55>mEkM"'^5!:23v`cR'`Ni Bt5tOLҏ7B7r#Vkz3*ޮ Z̩4ݏ[P 0Kªz5iPny'mU}rcg`sݏLoC'WWxKNFVI8hއ奋C;1vRћ]lKA ftgRNy1MxX1*f&+n`ljvc/xE.TG~T7׉l/Ņ0ǘqHS}jVTRzX&X[PyCo68`B柔wl$i-rt,[X qF%(ݭRFPXV&hxZ9U˶«Mw6 @aԼp@kD`ʭDc`{%wb__Mbw ^ @jg(n@ڐR2Λc$ye5!))5eR[.(o)L!4wtSOg6/єP ]1%ySj`GU_1@68i|I9 ^ڥvMN05e$*ɺ wb]_ycͺź NJqz j|R<`(2I>Tn_Q/,Jw ߊzﱫ"+G>Me#ϲ;Q*=׵&R ‰|ÿ5t-n؈kBT gpKX$y=g CpC+.=k_֓YH"^-_cԎʮ c={@cDOgtc.٤1,$, lDph$s\VWU,>_N.] hm~bcܛ$J hv0-- 0 .&WCZAQnb_ECHGG!=,3\exr?#v P24 )&j? Ek#YO<[,XOBSõx=f @ Lb׍&?E+o F2(\S@yQ0|sG !c%/H^K1G8W ~?al /q:%]F<%V/vF4\R0b_`X ֌0@N?q)W<p{%2?[CM9{]FnqghC0Ϸ"! 1A0Qaq?Day߮&44\`.)oKg9[6hLaR<:1꺭/|C-gb1DK:|cfsUd^fUkn2iv0zLzor@fm 9`۴x&!1AQaq ?XQ$𲪏be?} 21U {DPB^(:Vv!F p3 $,ʀK(7!_q.3SRr5OcYuXp0 e\KKGANbQ`Y}^xbYy"0CU˟``FuÉP-n6{ࠉ'zQ|ef e(ᘻ!"T 2=H98%c}9AT)֒gRG "R3vc^&c"THq@=9rc .+M-nXٙ%J*``)~q} 1LWCP {#.;BEt_Oq4(pZ["^Jez5C淚u5J"W4QEΘCG K?#m`S`1ZDlq$/E˶~nt,WEBh凜K̬EbD>d8ӻ7%yPd:븝ϓ[k8RN<6X0TH4İ(U HC8.ĩ_yHjRf*0ʳҚ/wyneY1iL @WMߴaKQ6C_EdG\8fT]B"(\$trȢ%$XL@e7eBCeX胩r[J.̶dQD ~ סHP>GBGTbMR:x)bVh&0e3w3ҙA! :rt͵bgN#-k-Tr̕9TBIhzq:n tYxU5k{Lq //xŠJz]/`URVzhGu-B\QԮ#)s1тr&^"OÏp e F@ۃL 5La_H=s-wgJn0 HUѼmq.q0gWg _0E%a4Yqhc⎇X[xsVe*zj^EAh{AM|@vq5P,hT-]q5.L8R%6LEce[ BQ؋lHW(Lw] .kV <-7#_ݳA4̕h^E*uʉ!]HK]ܢ{6fW},:jq i&.F~5 Q0T+#`jK)b*-c)S"eƐ#!TtxmSacb3{DřqTfPL}6l-uPAv: DЋrbx!q@-S_qLnOf&s#NE3`*5|d'8:*l=墱,#2L8.SRlzg )/xoP[@7%)H/GRMꀶUF N$v;_jnq+Oާz TeyR(j=ňƂp`VXl6+iD.]~ U )7Rw{n\,2d9{͏ZtUkr_|ǒE_vYe[Y(t-0H krPjA[5 Pc ƱU*7(Ytm㖣Q[URN NbFfGXxE,ex@Jhv6`mNJCR+W\ cEqYu+5wc4hX˦%hjMEb}յ1mAvUwkHEXlP>pTf$騫0i*X _hU$"sT*?I55 @3|WMIިN=qIJc2ZpX lxzQ;Vۣlp vV{f'30+|xU,6ܥH,jħL(р[LC>Gؤb-Y7_6^w ۄxJqWP xG*\ endstream endobj 13 0 obj << /Type /ExtGState /BM /Normal /CA 0.3 >> endobj 14 0 obj << /Type /ExtGState /BM /Normal /ca 0.3 >> endobj 15 0 obj << /Type /ExtGState /BM /Normal /CA 1 >> endobj 16 0 obj << /Type /ExtGState /BM /Normal /ca 1 >> endobj 17 0 obj << /Type /Page /MediaBox [0.000 0.000 595.280 841.890] /Parent 3 0 R /Contents 18 0 R >> endobj 18 0 obj << /Filter /FlateDecode /Length 1270 >> stream xXr6+` L{CMhPY[œk_({IG A88Ќ39~v}T3al>ŷ d6w|\dAx-jۉm&.Н`5 $~f9(ULWX6 UŜ-!P94 YI8.X֮IJl(ew aJ/MK\yj䑊 e|MHp+*gTl# nuq!Fw/x=8dKl./=%J&sAK, cxHyX]PO %'3fҋP$OhjH*Y,] g<=0pie~m}ܩ 8By<.dLW2ъ岸's0/\)B4tXas}2 \OC5α>|xQ7EC<8W$ Ѝe2m.iD]'֡LT?#bb!'Phřx vI(0L'"|Bn-%rP$H N*ѲXpP(WXB YG=̎3%y #шc_:݌^\8hJr}ջ`O֫7?C"V>]׺C~{gt_>ӧ?yw'j{?l?>>4OzftӸMAކܙU#\@q_i SsjTy3mxqvqNsʦ嬲)6`B_Bojpֻ;Ju4ꟁ%@8#邪cH~2KU -DÁcs6 ̀:b endstream endobj 19 0 obj << /Type /Page /MediaBox [0.000 0.000 595.280 841.890] /Parent 3 0 R /Annots [ 21 0 R ] /Contents 20 0 R >> endobj 20 0 obj << /Filter /FlateDecode /Length 990 >> stream xWr0+fciPX,MC4ЁD[TL,Yut=J(B|ݭhJg'76?GX"Ɩ(ql@iO`KV2mj#Mp֣e`Lx% ;-eMQ #|Go8:݄$,Qa FT !%1qe`rvK2ꌚ5bDehٔ΄˨I+O$%mV3Dȼƴqw֎hW(kmI27h. 1Bms"'X.i"EqF*ʃvǐ-#Ɩ~4p),6ײ5hZSR-0xʼn4e;1Y$jz@byo9m t a"M*.%͸= 'i&3Ml7TqY )T\ -9}/c]ue/( -c=%b9O~p w@yHEs~ r_=tЯ>U 3&fh?7[+Eq֧t]Jp`s߿8;3/`>[|x{*7cXt0^szSZnޭz 7ۮ[mvY^~|ކ_z_ t 8zV| {NBr8hvsGhyh }.{Sh0_w_#SwV"vE"͛f0Q70xHFB}A Gunr{bdi'H֮aP*Qﳿs endstream endobj 21 0 obj << /Type /Annot /Subtype /Link /A 22 0 R /Border [0 0 0] /H /I /Rect [ 290.2000 365.4327 296.1307 376.2860 ] >> endobj 22 0 obj << /Type /Action >> endobj xref 0 23 0000000000 65535 f 0000000009 00000 n 0000000074 00000 n 0000000120 00000 n 0000000413 00000 n 0000000450 00000 n 0000000599 00000 n 0000000702 00000 n 0000001955 00000 n 0000002064 00000 n 0000002172 00000 n 0000002280 00000 n 0000002393 00000 n 0000014419 00000 n 0000014478 00000 n 0000014537 00000 n 0000014594 00000 n 0000014651 00000 n 0000014756 00000 n 0000016100 00000 n 0000016224 00000 n 0000017287 00000 n 0000017415 00000 n trailer << /Size 23 /Root 1 0 R /Info 5 0 R /ID[<5be827feae19d01574a42caff9e3f260><5be827feae19d01574a42caff9e3f260>] >> startxref 17451 %%EOF তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকৃতিবিরোধী প্রকল্প – Bangladesh Environment Network

তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকৃতিবিরোধী প্রকল্প

দীর্ঘ সময় ধরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির অপেক্ষায় থেকে বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে তিস্তাপাড়ের জনগণ ভারতের অনৈতিক আচরণে অনেক বেশি হতাশ ও ক্ষুব্ধ। শুকনা মৌসুমে প্রয়োজনের সময় ভারত প্রায় সব পানিই উজানে তৈরি গজলডোবা বাঁধ এবং একাধিক দীর্ঘ ক্যানেল তৈরি করে তিস্তা অববাহিকার বাইরে নিয়ে যায়। ফলে ভাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের কৃষি, সেচ, নৌ-চলাচল এবং মত্স্যসম্পদ আহরণে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। নদীতে প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় আর্থসামাজিক জীবনে এবং প্রাণ-প্রকৃতিতে নেমে আসে এক ভয়ানক বিপর্যয়। ২৫ বছর ধরে এমন ধারাই চলছে। আন্তর্জাতিক নদীপ্রবাহের প্রচলিত নীতি-নিয়মের তোয়াক্কা না করে ভারত নানা অজুহাতে বাংলাদেশকে তার ন্যায্য পানির হিস্যা থেকে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করে চলেছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে বর্ষা মৌসুমে ভারত গজলডোবা বাঁধের সব গেট খুলে দিয়ে ভাটিতে অবস্থিত তিস্তানির্ভর অঞ্চলে ব্যাপক অকাল ও হড়কা বন্যার সৃষ্টি করে আসছে। মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ছাড়াও যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৃষ্টিপাতের ধরনে ব্যাপক পরিবর্তন। অসময়ে অতিবৃষ্টি এবং শুকনো মৌসুমে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার ফলে কয়েক বছর ধরে তিস্তা অববাহিকায় খরা, অকালবন্যার মাত্রা, ব্যাপকতা এবং স্থায়িত্বকালও বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায়, ১৯৫০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সময়কালে তিস্তা অববাহিকায় মোট ১০টি বন্যা হয়েছে (১৯৫০, ১৯৬৮, ১৯৭৩, ১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৯৩, ১৯৯৬, ২০০০ এবং ২০০৩ সালে)। অন্যদিকে গত পাঁচ বছরে তিস্তা অববাহিকায় মোট ১০টি বন্যা হয়েছে (২০১৬ সালে দুবার, ২০১৭ সালে দুবার, ২০১৯ সালে একবার, ২০২০ সালে তিনবার এবং ২০২১ সালে তিনবার)। সব মিলিয়ে তিস্তা এখন উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য কান্নার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকার চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান চায়না পাওয়ারের সঙ্গে তিস্তা নদীর সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে ভারত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় তিস্তা নদীর ভূপ্রাকৃতিক গঠনে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা কিনা নদীর প্রাকৃতিক নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ব্যাপকভাবে ব্যাহত করবে। এ প্রকল্পের মূল ধারণাটি হলো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ভাটি থেকে তিস্তা-যমুনার মিলনস্থল পর্যন্ত নদীর বর্তমান প্রস্থ কমিয়ে ৭০০ থেকে ১০০০ মিটারে সীমাবদ্ধ করা হবে। নদীটির গভীরতাও বাড়িয়ে ১০ মিটার করা হবে। প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী নদী শাসনের মাধ্যমে তিস্তা নদীকে সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হবে, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানি বহনক্ষমতা বাড়ানো হবে, নদীর দুই পাড়ে বিদ্যমান বাঁধের মেরামত করা হবে, নদীর দুই পাড়ে মোট ১০২ কিলোমিটার নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হবে, ৫০টি গ্রয়েন স্থাপন করা হবে, ড্রেজিংয়ের মাটি ভরাট করে নদীর দুই পাড়ে ১৭০ বর্গকিলোমিটার ভূমি উদ্ধার করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তাবিত তিস্তা নদীর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে ৯৮৩ মিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি প্রাপ্যতা বৃদ্ধি, জমি উদ্ধার, নৌ-চলাচল বৃদ্ধিসহ তিস্তাপাড়ে কৃষি অঞ্চল, শিল্প-কারখানা, আবাসন প্রকল্প, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে এবং তিস্তা পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা হবে। চিলমারী বন্দর থেকে ডালিয়ায় তিস্তা বাঁধ অংশে তিনটি নৌ-টার্মিনাল তৈরি করা হবে। নদীর দুই পাড়ে হাইওয়ে তৈরি করা হবে, যার মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি হবে।  

আপাতদৃষ্টিতে এসব প্রস্তাব খুবই যুগান্তকারী এবং উন্নয়নমুখী মনে হয় কিন্তু পরিবেশবিজ্ঞান ও পানিবিজ্ঞানের আলোকে এর সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখলে অনেক অসংগতি ধরা পড়ে।  তাহলে একটু তলিয়ে দেখা যাক। তিস্তা একটি বিনুনী নদী, যার বর্তমান প্রস্থ স্থানভেদে পাঁচ হাজার মিটারেরও অধিক। বিনুনী নদীগুলো অনেক বেশি পলি বয়ে আনার কারণে নদীবক্ষে চর পড়ে পড়ে অগভীর এবং অনেক প্রশস্ত হয়। পানি ও পলিপ্রবাহের ধরন, ভূতাত্ত্বিক গঠন, অঞ্চলের ঢালের পরিমাণ, বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে প্রাকৃতিক নিয়মেই কোনো অঞ্চলে কী ধরনের নদী গঠিত হবে তা নির্ধারণ হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পাহাড়ের পাদদেশে বিনুনী নদী এবং সমতলে সর্পিল নদীর আধিক্য দেখা যায়। প্রাকৃতিক নিয়ম ভঙ্গ করে কৃত্রিমভাবে কোনো নদীর গতিপথ কিংবা গঠন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদে অনেক কুফল বয়ে আনবে, কারণ প্রাকৃতিক নিয়মেই নদী আবার তার পূর্বাবস্থায় ফিরে গিয়ে একটি স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করে নেবে। উজান থেকে আসা পানির পরিমাণ নিশ্চিত না করে তিস্তা এ প্রকল্পের আওতায় শুধু নদীর প্রশস্ততা কমিয়ে এবং গভীরতা বাড়িয়ে শুকনা মৌসুমে পানিপ্রবাহের পরিমাণ বাড়ানো যাবে না। নদীটি খনন করার ফলে তলদেশে যে পানি দেখা যাবে তা আসলে নদীর দুই পাড়ের অববাহিকা অঞ্চলে অবস্থিত ভূগর্ভস্থ পানি ছাড়া অন্য কিছু নয়। নদীতে দৃশ্যমান পানি সেচের জন্য ব্যবহার করলে অববাহিকা অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাবে, তাতে অগভীর নলকূপের মাধ্যমে আহরিত পানীয় জল এবং সেচের পানির প্রাপ্যতা কমে যাবে। নদীটির দুই পাড়জুড়ে বাঁধ দেয়ার কারণে প্রস্থচ্ছেদ অনেক কমে যাবে, ফলে বর্ষাকালে যখন পানিপ্রবাহ অনেক বেড়ে যাবে তখন স্রোতের মাত্রাও অনেক বেড়ে যাবে এবং দুই পাড়ের ভাঙনপ্রবণতা অনেক বেড়ে যাবে। তিস্তা নদীর দুই পাড়ে মানবসৃষ্ট বিভিন্ন স্থাপনা এবং ভুল নদী ব্যবস্থাপনার কারণে রাজারহাট, বিলবিনিয়া, সৌলমারী, সুন্দরগঞ্জ-তারাপুর এবং বজরা এলাকায় নদীভাঙনের প্রবণতা অনেক বেশি। বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে নদীভাঙনের কারণগুলো নির্ধারণ করা জরুরি। নদীটির প্রস্থ কমিয়ে আনার ফলে নদীবক্ষে অবস্থিত চরগুলোর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। বিশেষ করে ডাউয়াবাড়ী, দক্ষিণ দেউয়াবাড়ী, চর সিন্দুর্না, ভোটেমারী, কলকন্দা, খুনিয়াগাছ চরে বসবাসরত হাজার হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তিস্তা নদীর অববাহিকায় বুড়ী তিস্তা, ঘাঘট, বুড়িয়াল, মানস, জমিরজান, সানিইয়ানজান, ভটেশ্বরী, সতী, মরা তিস্তাসহ আরো অনেক শাখা ও উপনদী রয়েছে। এ নদীগুলোর সঙ্গে মূল তিস্তা নদীর সংযোগ সক্রিয় থাকলে বন্যার পানি প্লাবনভূমিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বন্যার তীব্রতা কম হয়। দুই পাড়ের বাঁধের কারণে উপনদী ও শাখা নদীগুলোর সঙ্গে তিস্তার মূলধারার সংযোগও বিঘ্নিত হবে এবং দুই পাড়ের প্লাবনভূমিতে বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়তে না পারার কারণে পাড়ের বাঁধগুলো হুমকির মুখে পড়বে। বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য নদীপাড়ের কোনো বাঁধই সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারে না; বরং বাঁধ থাকার ফলে প্লাবনভূমিতে গড়ে ওঠা বাড়িঘর এবং অন্যান্য স্থাপনায় বাস করা মানুষের মনে একটি ভ্রান্ত নিরাপত্তার সৃষ্টি হয়। উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে একটি বড় বন্যার সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি নদীর দুই পাড়ে অবস্থিত ৮০টি সরকারি ও ১ হাজার ৪৩টি বেসরকারি বাঁধ ভেঙে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাঁধগুলোর গুণগত মান এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া অনেক উন্নত। বাংলাদেশেও বন্যার সময় নদীপাড়ের অনেক বাঁধই ভেঙে যায়। গত ২০ অক্টোবরের বন্যার সময়েও তিস্তাপাড়ের বেশ কয়েকটি বাঁধ ভেঙে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নদীটির প্রাকৃতিক গঠন এক্কেবারেই পাল্টে যাবে।  সাম্প্রতিক কালে দেয়া হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি নদীকেই জীবন্ত এবং আইনি সত্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ত নদীটির হাত-পা (শাখা-প্রশাখা-উপনদী) কেটে ফেলে সরু খালে পরিণত করলে হাইকোর্টের আদেশটিও অমান্য করা হবে কিনা, সেটা বিবেচনা করে দেখা প্রয়োজন। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি বাতিল করে কিংবা স্থগিত রেখে অভ্যন্তরীণভাবে এ মহাপরিকল্পনা নেয়ার মাধ্যমে পক্ষান্তরে তিস্তা বিষয়ে ভারতের একতরফা নিয়ন্ত্রণকেই স্বীকৃতি দেয়া হবে। তিস্তার ওপর বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার দাবি আরো জোরদার করাই বরং সঠিক হবে। তিস্তা নদীতে শুকনা মৌসুমে পানি ধরে রাখার জন্য আরো বাঁধ নির্মাণ করলে প্রস্তাবিত নৌ-চলাচল বিঘ্নিত হবে এবং বাঁধের উজানে পলি পড়ে খননকৃত সরু খালটি অচিরেই ভরাট হয়ে যাবে।

সমাধানের উপায় কী?  তিস্তাসহ সব শাখা ও উপনদীতে সর্বাঙ্গীণ জরিপের মাধ্যমে প্রতিটি নদীর পানি ও পলি ধারণক্ষমতা নির্ধারণ করে সেই মোতাবেক খনন করা প্রয়োজন। খননকৃত মাটির নমুনা পরীক্ষা করে ব্যবহার উপযোগিতা নির্ণয় করে সেই মাটি কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে নদীভাঙন রক্ষার জন্য স্লাব, ইট কিংবা অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী তৈরির শিল্প-কারখানা নদীর দুই পাড়ে নির্মাণের উপযোগিতা যাচাই করা যেতে পারে। প্লাবনভূমিতে রাস্তাঘাট, বাড়িঘরের উচ্চতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেও খননকৃত পলি ব্যবহার করার জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ গড়ার উপযোগিতা যাচাই করা যেতে পারে। তবে নদী খনন কিংবা শাসন অবশ্যই নদীর প্রাকৃতিক গঠন ও ধরন বজায় রেখেই করতে হবে। তিস্তা অববাহিকা অঞ্চলে অনেক মরা খাল ও নদী রয়েছে। সরকারি জরিপের নথিপত্র অনুযায়ী সেগুলো চিহ্নিত করে খননের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করতে পারলে শুকনা মৌসুমে পানি ধরে রাখা এবং বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি ধারণক্ষমতাও বাড়ানো সম্ভব। তিস্তা ও যমুনার সংযোগস্থলে তিস্তা নদী প্রশস্ততা মাত্র ৭০০ মিটার, অথচ উজানে এ নদীর প্রশস্ততা স্থানভেদে পাঁচ কিলোমিটার। নদীর সংযোগস্থলটি অস্বাভাবিকভাবে সরু হওয়ার কারণেও উজানে বন্যার পানি সিঞ্চন বাধাগ্রস্ত হয় এবং বন্যার স্থায়িত্ব বাড়ে। খননের মাধ্যমে এ সংযোগস্থলের প্রশস্ততা আরো বাড়ানো জরুরি। প্রাকৃতিকভাবে উজানের তুলনায় ভাটিতে নদীর বহনক্ষমতা বাড়ে কিন্তু উজানে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের কারণে শুকনা মৌসুমে তিস্তার প্রবাহ ক্ষীণ রূপ ধারণ করে। ফলে সংযোগস্থলে প্রমত্তা যমুনার প্রবাহ তিস্তার সংযোগ মুখে বাঁধ হিসেবে কাজ করে বলে ধারণা করা হয়, যে কারণে তিস্তায় বয়ে আসা পলি যমুনার সংযোগস্থলে জমাট হয়ে নদীমুখটি সরু হয়ে গেছে। প্রাকৃতিক নিয়ম উপেক্ষা করে নয়, বরং প্রকৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখেই শুধু আমাদের টিকে থাকা সম্ভব। প্রতিবেশী যেসব রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তঃনদীর যোগাযোগ রয়েছে সেসব রাষ্ট্রের সঙ্গে পানি ডিপ্লোম্যাসিকে সব ডিল্পোম্যাসির কেন্দ্রে রেখে সুসম্পর্ক গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করতে হবে। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে যদি আন্তঃনদীর ন্যায্য হিস্যা না পাওয়া যায় তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে এবং সেই লক্ষ্যেই জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ আইন (১৯৯৭) অনুস্বাক্ষর করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাতে হবে। নদী ব্যবস্থাপনায় সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে বাংলাদেশের সব ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে। এখনই সময় নদী ও পানিসম্পদ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় মনোযোগী হওয়ার। প্রকৃতিবিরোধী এই ভ্রান্ত বাণিজ্যিক প্রকল্প বাতিল করে পরিবেশ-প্রতিবেশসম্পন্ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। প্রকৃতিকে বাধা দিয়ে নয়, বরং প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিয়ে চলতে পারলেই সবার মঙ্গল হবে। 1

  1. এই নিবন্ধটি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বণিক বার্তায় ছাপা হয়েছিল। লেখকের অনুমতিক্রমে এটি পুনঃপ্রকাশিত হল।